কিন্তু গত তিন দিন যাবত অনলাইনে আয় বিকাশে পেমেন্ট ও মোবাইল দিয়ে টাকা আয় বিকাশে পেমেন্ট বিষয়ে রিসার্চ করে এ বিষয়ে আমার এক ধরনের তিক্ত অভীজ্ঞ হয়েছে যেটি আমাকে খুব হতবাক করেছে। আসলে বাংলাদেশের বেশিরভাগ ইউটিউবাররা ও ব্লগাররা কেন এ ধরনের ভূল তথ্য দিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে সেটি আমি বুঝে উঠতে পারি না। ফেসবুকে গুজব রটানো আর ব্লগে লোভণীয় মিথ্যা তথ্য দেওয়া আজকাল এক ধরনের ফ্যাশন হয়ে উঠছে।
অনলাইন আয় vs বাংলা ব্লগার ও ইউটিউবারঃ
২০১৫ সাল থেকে এখন অবধি প্রায় দীর্ঘ ৫ বছর যাবৎ ব্লগিং করে অনলাইনে যুক্ত আছি। আমরা ব্লগে টেক বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল শেয়ার করি থাকি। কখনো কোন ধরনের ভূল তথ্য শেয়ার করে আমাদের পাঠকের মনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করিনি। অনলাইন হতে যতটুকো জেনেছি ততটুকো সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। অনেকে আমাদের ব্লগ পড়ে বিভিন্ন বিষয় জানতে পেরেছেন বলে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন। অল্পতেই পাঠকের যতটুকো ভালোবাসা পেয়েছি তাতেই আমরা সন্তুষ্ট থেকেছি। কখনো অহেতুক পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য কিংবা ব্লগে বেশি ট্রাফিক পাওয়ার আশায় লোভনীয় পোষ্ট শেয়ার করে ভূল তথ্য দেইনি।কিন্তু গত ৩ দিনে অনলাইনে আয় বিকাশে পেমেন্ট ও মোবাইল দিয়ে টাকা আয় বিকাশে পেমেন্ট পাওয়ার বিষয় সংক্রান্তে অনলাইনে বিভিন্ন ব্লগ পড়ে ও ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও দেখে ব্লগিং এর প্রতি আমার এক ধরনের ঘৃণা চলে এসেছে। বিশেষকরে বাংলা ব্লগে গুগল এডসেন্স সাপোর্ট করার পর থেকে বাঙ্গালি ব্লগাররা এখন পোস্টের আর্টিকেল এর কোয়ালিটির চাইতে যেকোন উপায়ে ব্লগে ট্রাফিক বাড়িয়ে টাকা আয় করার বিষয়টাকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে। যার ফলশ্রুতিতে বাংলা ব্লগগুলো কোয়ালিটি হারিয়ে ফেলছে। এভাবে ভূল ইনফরমেশন শেয়ার করে অনলাইন হতে টাকা আয় করার কম্পিটিশন বাড়তে থাকলে একসময় বাংলা ব্লগের প্রতি মানুষের আস্থা কমে যাবে।
উদাহরণ হিসেবে বলছি কিছু দিন পূর্বে গুগল এডসেন্স একাউন্ট ডিলিট করার বিষয়ে আমাদের ব্লগের একজন পাঠক আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, উনার একটি এডসেন্স একাউন্ট ব্যান হয়েগেছে, এখন তিনি কিভাবে সেটি ডিলিট করে পুনরায় আবেদন করবেন। তখন আমি আমাদের ব্লগের একটি পোস্ট রেফার করি। তিনি ঐ পোস্ট পড়ে জানান যে, ভাই অনেক উপকার হলো। কিন্তু ইতোপূর্বে আমি অনেক ভূল করে ফেলেছি। আসলে এ বিষয়ে না জানার কারনে ভূলগুলো হয়েছে। শেষে তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, ভূল হওয়াটাই স্বাভাবিক, জানার কোন ভালো উপায় না থাকলে ভূলত হবে। অনেক বাংলা ব্লগে খুঁজেছি কিন্তু কোন ভালো সমাধান পাইনি।
এই উদাহরণটি শেয়ার করার পিছনে আমার একটাই উদ্দেশ্যে আমরা যারা কনটেন্ট এর কোয়ালিটি দিকে লক্ষ্য না রেখে শুধুমাত্র আয় বাড়িয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে ব্লগিং করছি, তারা এভাবে মিথ্যা তথ্য দিয়ে খুব বেশি দিন অনলাইন হতে আয় করে যেতে পারবেন না। অনলাইন হতে দীর্ঘদিন আয় করতে চাইলে আয়ের বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে আর্টিকেলের কোয়ালিটির উপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
- AMP Blogger Template এর সুবিধা এবং অসুবিধা কি?
- Backlinks তৈরি: Backlink কি এবং কিভাবে Backlinks পাওয়া যায়?
- SEO কি: সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন কি এবং কিভাবে SEO শিখবেন?
- Nofollow এবং Dofollow Links কি বা পার্থক্য কতটুকো?
- কিভাবে একটি ব্লগ/ওয়েবসাইট গুগল সার্চ ইঞ্জিনে সাবমিট করতে হয়?
নুতন ইউটিউবারদের এ ধরনের কার্যকলাপ হয়তবা মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু যারা অনলাইনে পুরাতন এবং অভীজ্ঞ তাদের এ ধরনের এক্টিভিটিজ দেখলে আপনার কেমনটা লাগবে? বাংলাদেশের জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সার ও ইউটিউবার “ফ্রিল্যান্সার নাসিম” সাহেব আমাদের খুবই পরিচিত একজন ব্যক্তি। তাকে আমরা অনেক বড় মাপের ফ্রিল্যান্সার হিসেবে মানি। আমি নিজেও বিশ্বাস করি তিনি ফ্রিল্যান্সিং এর বিষয়ে অনেক কিছু জানেন এবং ফ্রিল্যান্স করে অনলাইন হতে অনেক টাকা আয় করছেন। কিন্তু তাঁর মত একজন অভীজ্ঞ ব্যক্তি যদি ইউটিউবে এ ধরনের ফালতু ও ভূল তথ্য দেয়, তাহলে আপনার কাছে কেমন লাগবে? নতুনদের ক্ষেত্রে এ ধরনের বিষয় স্বাভাবিক হলেও অভীজ্ঞদের ক্ষেত্রে এগুলো কোনভাবে মেনে নেওয়া যায় না। নতুনদের ব্যক্তিত্ব রক্ষা করার মত জ্ঞান না থাকলেও অভীজ্ঞরা অবশ্যই এসব ভূল ও সিলি বিষয় শেয়ার না করে ব্যক্তিত্ব রক্ষা করে চলা উচিত।
কোন ভালোমানের ইউটিউবার ও ব্লগারকে আমি কখনো ভূল তথ্য শেয়ার করতে দেখিনি। আসলে আমরা সবাই ব্লগিংকে পেসন হিসেবে না নিয়ে প্রফেশন মনেকরে আমাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করার আশায় ভূল তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে যাচ্ছি। এতেকরে লোকজন আপনার ভূল তথ্যের উপর অনুপ্রাণিত হয়ে ব্লগে বা ইউটিউবে কাজ শুরু করছে, কিন্তু কাজ শুরু করার পর বাস্তবতা জানতে পেরে ব্লগিং ছেড়ে দিয়ে আপনার আমার মত ব্লগার ও ইউটিউবারদের গালিগালাজ করে গুষ্ঠি উদ্ধার করে ব্লগিং ছেড়ে দিচ্ছে। একজন প্রকৃত ব্লগার হিসেবে কোন ধরনের ভূল তথ্য শেয়ার করা আপনার নিকট মোটেও কাম্য নয়।
আমি আগেও বলেছি একজন ভালোমানের ইউটিউবার বা ব্লগার কখনো ভূল তথ্য শেয়ার করতে পারেন না। বাংলাদেশের জনপ্রিয় টেক ইউটিউব চ্যানেল Sohag360 এর মালিক সোহাগ ভাইকে আপনারা আদর্শ হিসেবে ধরে নিতে পারেন। আমি তার ইউটিউব চ্যানেলের কোন ভিডিওতে এখনো পর্যন্ত কোন ধরনের ভূল তথ্য শেয়ার করতে দেখিনি। একজন ব্লগার বা ইউটিউবারকে শুধুমাত্র ট্রাফিক ও আয়ের কথা চিন্তা না করে কনটেন্ট এর কোয়ালিটির প্রতি ফোকাস করা উচিত। তাহলে সেই কোয়ালিটি কনটেন্ট একজন ব্লগারকে সাফল্যের প্রান্তে নিয়ে যাবে।
অনলাইনে টাকা আয় করার উপায়ঃ
এগুলো অবশ্যই পড়বেন -
মোবাইল দিয়ে টাকা আয়ঃ
বর্তমানে সবার হাতে হাতে স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেট রয়েছে। একদিকে যেমন স্বল্পমূল্যে মোবাইল কিনতে পাওয়া যায় অন্যদিকে খুব কমদামে ইন্টারনেট প্যাকেজ কেনা সম্ভব হয়। সেই জন্য বর্তমানে আরেকটি প্রশ্ন কমন হয়ে উঠেছে, আমি অনলাইনে মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করতে পারব কি না? কিংবা মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার সহজ কোন উপায় আছে কি না? আপনার এই ধরনের প্রশ্নের জবাবে আমি বলব মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার অনেক ভালোমানের উপায় রয়েছে। কিন্তু মোবাইল দিয়ে সহজে আয় করার কোন ধরনের উপায় নেই।আপনি মোবাইল দিয়ে মাসে ২০০-৩০০ ডলার অনলাইন হতে আয় করতে পারবেন। তবে মোবাইল দিয়ে আয় করার জন্য আপনাকে শ্রম দিতে হবে এবং তুলনামূলকভাবে যাদের কম্পিউটার বা ল্যাপটপ আছে তাদের তুলনায় আপনাকে আরো বেশি পরিশ্রম করতে হবে।
কিভাবে মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করবেন?
আপনি চেষ্টা করলে নিয়মিত কিছু সময় ব্যয় করে আপনার হাতে থাকা মোবাইল দিয়ে অনলাইন হতে টাকা আয় করতে পারবেন। তবে একটি বিষয় জেনে রাখুন সে ক্ষেত্রে এক দিনে অথবা এক সপ্তাহ আপনার আয় শুরু হয়ে যাবে না। কাজ শুরু করে কমপক্ষে ৩-৬ মাস কোন ধরনের লাভের আশা না করে নিয়মিত কাজ করে যেতে হবে। তারপর ইনকাম শুরু হয়েগেলে নিয়মিত কাজ না করেও মাঝে মধ্যে কাজ করেও অনলাইন হতে মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করতে পারবেন।মোবাইল দিয়ে আয় করার জন্য ইউটিউব হচ্ছে সবচাইতে সহজ ও জনপ্রিয় প্লাটফর্ম। তাছাড়া মোবাইল দিয়ে গুগল ব্লগার হতে আপনার একটি ফ্রি ব্লগ তৈরি করে ব্লগে আর্টিকেল লিখে গুগল এডসেন্স হতে মাসে মাসে অনলাইন হতে মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করতে পারবেন।
০১। YouTube হতে মোবাইল দিয়ে টাকা আয়ঃ
আপনি যদি ভ্রমন প্রিয় লোক হন তাহলে বিভিন্ন সুন্দর সুন্দর প্রকৃতিক দৃশ্যগুলো আপনার মোবাইলের ক্যামেরায় ফ্রেমবন্দী করেও এ কাজটি করতে পারেন। অথবা আপনি যে বিষয় ভালভাবে জানেন সে বিষয়ে বিভিন্ন ভিডিও টেউটরিয়াল তৈরী করেও কাজটি করতে পারেন। যারা গৃহিনী রয়েছেন তারা চাইলে বিভিন্ন রান্নার রেসিপি টিপস ও সাজগোজের করার ভিডিও তৈরি করে নিতে পারেন।এখনকার মোবাইল ফোনে অনেক ভালোমানের ভিডিও রেকর্ডিং করা যায় বিধায় আপনি চাইলে আপনার মোবাইল দিয়ে ক্যামেরার সামনে বসে ভিডিও বানাতে পারেন অথবা ক্যামেরার সামনে আসতে না চাইলে মোবাইল দিয়ে স্ক্রিন ভিডিও রেকর্ড করে বিভিন্ন ধরনের টিউটরিয়াল ভিডিও তৈরি করতে পারেন। একটি ভিডিও তৈরি করা থেকে শুরু করে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করা ও ভিডিও আপলোড করার যাবতীয় কাজ মোবাইলের মাধ্যমে করা যায়।
এগুলো অবশ্যই পড়বেন -
- কিভাবে একটি YouTube Channel তৈরি করতে হয়?
- ইউটিউব প্রতি ১০০০ ভিউতে কত টাকা দেয় (YouTube এ কত Views এ কত টাকা)?
- ইউটিউব এসইও: কিভাবে ইউটিউব ভিডিও এসইও করে ভিডিও এর ভিউ বাড়াবেন?
- Blogging নাকি YouTube: কোনটি দিয়ে বেশি টাকা ইনকাম করা যায়?
০২। ব্লগে আর্টিকেল লিখে মোবাইল দিয়ে আয়ঃ
এগুলো অবশ্যই পড়বেন -
- কিভাবে BlogSpot দিয়ে একটি ফ্রি ব্লগ তৈরি করতে হয়?
- কিভাবে BlogSpot ব্লগে Custom Domain সেটআপ করতে হয়?
- কেন BlogSpot ব্লগে Custom Domain ব্যবহার করা প্রয়োজন?
০৩। Android Apps দিয়ে টাকা আয়ঃ
আপনি যদি এন্ড্রয়েড এ্যাপ দিয়ে টাকা আয় করতে চান তাহলে গুগল প্লে-স্টোরে “Earning App, Online Income App, Recharge App লিখে সার্চ দিলে অনেক ধরনের অনলাইন আয়ের এন্ড্রয়েড এ্যাপ পেয়ে যাবেন। যেমন- অনলাইনে টাকা আয় করার বিশ্বস্ত কয়েকটি এ্যাপ হচ্ছে “MCent“, “Amulyam“, “Pocket Money“, “TaskBucks”. এই ধরনের এ্যাপগুলো ডাউনলোড করে ইনস্টল করার পর আপনাকে একেকটি এক এক ধরনের কাজ দেবে। আমি এগুলো নিয়ে বিস্তারিত লিখতে চাইছি না। কারণ এগুলো নিয়ে আমার কোন আগ্রহ নেই। তবে এ্যাপ ডাউনলোড করে ইনস্টল করলে কি করতে হবে সেটা নিজেই বুঝতে পারবেন। কারণ এই এ্যাপগুলোর কাজের ধরন খুব সহজ হয়ে থাকে।
মোবাইল দিয়ে টাকা আয় বিকাশে পেমেন্টঃ
বর্তমানে প্রত্যেকটি অনলাইন প্লাটফর্ম তাদের গ্রাহকের উপার্জিত টাকা বিশ্বস্ততার সহিত হাতে পৌছে দেয়। এ ক্ষেত্রে আপনার আয়ের টাকা কেবলমাত্র বিকাশের মাধ্যমে পেতে হবে এমনটা চিন্তা করা উচিত নয়। অনলাইনে সকল বড় প্লাটফর্মগুলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা হাতে পৌছে দেয়। সেই জন্য অনলাইন হতে আয়ের টাকা খুব সহজে আপনার যেকোন ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে নিতে পারবেন।
এগুলো অবশ্যই পড়বেন -
- Google Blogger নাকি WordPress, কোনটি ব্যবহার করবেন?
- WordPress.Com এবং WordPress.Org এর মধ্যে পার্থক্য কি?
- কেন গুগল Blogspot Blogger দিয়ে ব্লগ তৈরি করবেন?