অন পেজ এসইও: আল্টিমেট গাইডলাইন (২০২০)

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) এর বড় একটি অংশ হচ্ছে অন পেজ এসইও। যখন কোন ব্লগ/ওয়েবসাইট সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করতে হয়, তখন দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অনুসরণ করার প্রয়োজন পড়ে। একটি হচ্ছে অন-পেজ অপটিমাইজেশন এবং অপরটি হচ্ছে অফ-পেজ অপটিমাইজেশন। আজ আমরা অন-পেজ অপটিমাইজেশন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার পাশাপাশি অন-পেজ অপটিমাইজেশন এর মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পাতায় অবস্থান নেয়ার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ টেকনিক শেয়ার করব।
অন পেজ এসইও: আল্টিমেট গাইডলাইন (২০২০)

আমরা সবাই জানি যে, On Page এসইও হচ্ছে ব্লগের অভ্যন্তরিন সকল স্ট্রাকচার যথাযথভাবে সার্চ ইঞ্জিনের উপযোগী করে নেয়া। ব্লগের টাইটেল ট্যাগ, ম্যাটা ট্যাগ, কীওয়ার্ড ও ভালমানের কনটেন্ট ইত্যাদি যথাযথভাবে অপটিমাইজ করার মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিনে অবস্থান নেয়ার একটি প্রক্রিয়া হচ্ছে অন পেজ এসইও। যখন এ কাজগুলি সঠিকভাবে করতে পারবেন তখন আপনার ব্লগের On Page অপটিমাইজেশন পরিপূর্ণ হয়েছে বলে মনে করতে পারবেন।

অন পেজ এসইও কি?

অন পেজ এসইও এর আরেক নাম হচ্ছে অন-সাইট এসইও। একটি ওয়েব পেজের মধ্যে যত ধরনের কনটেন্ট থাকে, সেগুলোকে ইউজার ফ্রেন্ডলি এবং সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি করে গড়ে তুলাই হচ্ছে অন পেজ এসইও এর কাজ। বিশেষকরে একটি ওয়েব পেজের টাইটেল ট্যাগ, ম্যাটা ট্যাগ ও কীওয়ার্ড সঠিকভাবে অপটিমাইজেশন করাকে আমরা অন পেজ এসইও হিসেবে জানি।

ধরুন, আপনার একটি ব্লগ আছে। সেই ব্লগকে অনলাইনে একটিভ রাখার জন্য প্রথমে একটি ভালোমানের থিম তৈরি করে নিতে হয়েছে। তারপর সেই ব্লগটি আপনার হোস্টিং সার্ভারে আপলোড করেছেন। সবশেষে আপনি ব্লগে কনটেন্ট শেয়ার করে পোস্ট পাবলিশ করেছেন।

এখানে প্রথমত ব্লগ তৈরি করার সময় একটি ব্লগের থিমের ভীতরে কিছু অন পেজ এসইও এর কাজ করতে হয়। তারপর ব্লগের স্পীড ভালো রাখার জন্য একটি ভালোমানের হোস্টিং কিনে নিতে হয়। সবশেষে ব্লগে পোস্ট লেখার সময় পোস্টের কনটেন্ট সহ আরো কিছু বিষয় সার্চ ইঞ্জিন ও ইউজার ফ্রেন্ডলি করার জন্য অন পেজ এসইও করতে হয়। মূলত এই সবগুলো বিষয় হচ্ছে অন পেজ এসইও এর কাজ।

অন পেজ এসইও এর সংজ্ঞা আরো সহজভাবে বলতে পারি যে, একটি ওয়েব সাইটের ভীতরে (বাহিরে নয়) যে সমস্ত এসইও এর কাজ করা হয়, তাকে অন পেজ এসইও বলা হয়। আরেকটু সহজভাবে বলতে পারি, এ ধরনের এসইও এর কাজ একটি ওয়েবসাইট অন রেখে ওয়েবসাইটের অভ্যন্তরে করা হয় বিধায় অন পেজ এসইও বলা হয়।

এসইও সম্পর্কে জানতে আরো পড়ুন - 

কিভাবে অন পেজ এসইও করবেন?

আমি আগেও বলেছি অন পেজ এসইও হচ্ছে ব্লগের অভ্যন্তরিন টাইটেল ট্যাগ, ম্যাটা ট্যাগ, কীওয়ার্ড, ভালমানের কনটেন্ট ইত্যাদি সঠিকভাবে সেট করে নেয়ার একটি প্রক্রিয়া। মূলত সার্চ ইঞ্জিন হচ্ছে এক ধরনের সফটওয়ার। এটি মানুষের মত ব্রেইন খাঠিয়ে কিছু বুঝতে পারে না। তাকে কমান্ড দেয়ার মাধ্যমে যা বুঝানো হয়, সে তাই বুঝে।

এ ক্ষেত্রে সার্চ ইঞ্জিনকে তার সঠিক নিয়মানুসারে কমান্ড দিতে না পারলে, সার্চ ইঞ্জিন একটি ব্লগ/ওয়েবসাইট সম্পর্কে সঠিকভাবে না বুঝার কারনে Ignore করে। সেই জন্য সার্চ ইঞ্জিনকে আপনার ব্লগের সকল বিষয়ের গুরুত্ব যথাযথভাবে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য সঠিক নিয়মে On Page এসইও করতে হবে। আপনি যদি ব্লগের সকল অন পেজ এসইও যথাযথভাবে করতে পারেন, কেবল তবেই আপনার ব্লগের পোষ্ট সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পাতায় পাওয়ার আশা করতে পারেন। নিচে আমরা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ On Page এসইও এর বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।

১। পোষ্ট টাইটেল অপটিমাইজ

অন পেজ এসইও এর সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ পার্ট হচ্ছে পোস্টের টাইটেল অপটিমাইজেশন করা। সার্চ ইঞ্জিন হতে একটি ব্লগে যত ভিজিটর আসে তার প্রায় ৪০% নির্ভর করে পোস্ট টাইটেল এর উপর। কারণ পোস্টের টাইটেল হচ্ছে পোস্টের বিষয় বস্তুর সারসংক্ষেপ। কনটেন্ট নিংসন্দেহে এসইও এর রাজা কিন্তু টাইটেলকে অনুসরণ করেই পোষ্টের কনটেন্ট হয়ে থাকে।

একজন লেখক যদি পোষ্টের বিষয় বস্তুর সাথে মিল রেখে আকর্ষণীয় পোষ্ট টাইটেল লিখতে পারেন, তাহলে আমি মনেকরি ব্লগ পোষ্টের অভ্যন্তরিন বাকী এসইও খুবই সহজে মেনটেইন করতে পারবেন। একটি সুন্দর ও অপটিমাইজ করা ব্লগ পোষ্ট টাইটেল যে কোন সার্চ ইঞ্জিন রোবটের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম। আপনি কিভাবে সার্চ ইঞ্জিন Friendly ব্লগ Post Title লিখবেন এ নিয়ে ইতিপূর্বে বিস্তারিত পোষ্ট শেয়ার করেছি।
অন পেজ এসইও: পোষ্ট টাইটেল অপটিমাইজ
পোস্ট টাইটেল লিখার সময় খেয়াল রাখতে হবে, আপনি যে কিওয়ার্ড টার্গেট পরে পোস্ট লিখবেন সেই কিওয়ার্ড অবশ্যই পোস্টের টাইটেলের প্রথমে রাখার চেষ্টা করবেন। আপনার টার্গেটেড কিওয়ার্ডটি টাইটেলের যত আগে থাকবে, আপনার পোস্টটি সার্চ ইঞ্জিনে র‌্যাংক করার সম্ভাবনা তত বেশি তৈরি হবে। উপরের চিত্রের ৩ টি পেজ টাইটেল দেখুন, আর নিজেই বলুন আপনার দৃষ্টিতে কোন টাইটেলটি সবচাইতে ভালো মনে হচ্ছে।

পেজ টাইটেল অপটিমাইজ করার সঠিক নিয়ম

  • ​টাইটেলে অবশ্যই পোস্ট এর মেইন কিওয়ার্ড রাখবেন।
  • টার্গেটেড কিওয়ার্ড পোস্টের শুরুতে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
  • পোস্ট টাইটেল ৫০-৬০ অক্ষরের মধ্যে রাখতে হবে।
  • টাইটেলে মেইন কিওয়ার্ড একধিকবার ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • ইউজার ফ্রেন্ডলি (অর্থবহ) টাইটেল লিখতে হবে।
  • টাইটেলে কোলন ( : ) ও হাইফেন (-) ব্যবহার করতে পারেন।

২। পোষ্টের Permalink Structure

একটি পোষ্টের সুগঠিত Url দেখতে যেমন সুন্দর মনে হবে, তেমনি সার্চ ইঞ্জিনের কাছে অনেক গুরুত্ব বহন করতে পারবে। আপনি যে বিষয় নিয়ে পোষ্ট করছেন সে বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে পোষ্টের Permalink গঠন করতে হবে। কারন পোষ্টের Permalink টি যদি পোষ্টের গুরুত্বপূর্ণ কীওয়ার্ডের সাথে মিল রেখে করেন, তাহলে সার্চ ক্যোয়ারী থেকে সার্চ রেজাল্টের ভাল অবস্থানে আসার অধীক সম্ভাবনা তৈরি হয়ে যায়। অনেকে এ বিষয়টিকে কোন গুরুত্ব না দিয়ে কোন রকম একটি Url লিখে থাকেন।
অন পেজ এসইও: পোষ্টের Permalink Structure
উদাহরণ স্বরূপ-আপনি অন পেজ এসইও নিয়ে একটি পোষ্ট করছেন। আপনার পোষ্টের Url টি যদি www.bloggerbangladesh.com/post78 দিয়ে রাখেন, তাহলে সার্চ ইঞ্জিন পোষ্টের Url থেকে পোষ্টের বিষয় সম্পর্কে কিছুই বুঝতে পারবে না। অপর দিকে Url টির গঠন যদি www.bloggerbangladesh.com/on-page-seo হয়, তাহলে সার্চ ইঞ্জিন সহজে বুঝতে পারবে পোষ্টটি অন পেজ এসইও নিয়ে লিখা হয়েছে।

Permalink তৈরির সঠিক নিয়ম

  • ​​Url এ অবশ্যই মেইন কিওয়ার্ড রাখতে হবে।
  • Url ছোট করে লিখতে হবে (২০২০ আপডেট)।
  • গঠনমূলক Url লিখতে হবে।
  • Url এর অবশ্যই প্রতিটি শব্দের পর হাইফেন (-) ব্যবহার করবেন।
  • লিংকে সংখ্যা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

৩। প্রথম প্যারাতে মূল কিওয়ার্ড ব্যবহার

    আপনার কাঙ্খিত পোস্টের প্রথম প্যারার ১০০ কিওয়ার্ডের ভীতরে অবশ্যই আপনার মূল কিওয়ার্ড ব্যবহার করবেন। সেই সাথে মূল কিওয়ার্ডের সাথে রিলেটেড অন্যান্য কিওয়ার্ড রাখার চেষ্টা করতে হবে। কারণ গুগল সার্চ ইঞ্জিন পোস্টের প্রথম প্যারাকে গুরুত্বের সহিত মূল্যায়ন করে। 
    কিভাবে অন পেজ এসইও করবেন?
    উপরের চিত্রটি দেখুন, এখানে আমি পোস্টের শুরুতে আমার টার্গেটেড কিওয়ার্ডের সাথে সম্পৃক্ত কিওয়ার্ড ব্যবহার করেছি। তারপর মূল কিওয়ার্ডটিও ব্যবহার করার পাশাপাশি কিওয়ার্ডটি Bold করে দিয়েছি। সেই সাথে প্রথমে প্যারাতে আরো কিছু কিওয়ার্ড রেখেছি। এভাবে প্রথম প্যারা লিখলে গুগল একটি পোস্টের বিষয় সহজে বুঝে নিতে পারে।

    ৪। পোষ্টের Heading Tags

    সাধারণত ব্লগের বিভন্ন গুরুত্বপূর্ণ Heading Tags গুলো H1, H2, H3 এবং H4 আকারে লিখা হয়ে থাকে। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের ক্ষেত্রে এই ধরনের Heading Tags গুলো অনেক গুরুত্ব বহন করে থাকে।

    আপনি যখন কোন একটি পোষ্ট লিখবেন, তখন পোষ্টের মধ্যে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ Heading Tag টা থাকবে H1 আকারে। কারণ সার্চ ইঞ্জিনের কাছে যে কোন ব্লগের H1 ট্যাগটা অন্যান্য Heading Tag এর চাইতে বেশী গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে। তারপর বাকী Headings গুলো H2, H3 এবং H4 হয়ে ক্রমান্বয়ে ব্যবহার হতে থাকবে। এ নিয়ে আমরা ইতিপূর্বে Multiple Posts Titles এবং Multiple Header Title Tag নামে দুটি পোষ্ট শেয়ার করেছি।

    পোষ্টের Tags লেখার সঠিক নিয়ম

    • ​​পোস্টের টাইটেল অবশ্য হবে H1.
    • একটি পোস্টে কেবলমাত্র একটি H1 থাকবে।
    • পোস্টের গুরুত্বপূর্ণ কিওয়ার্ড H2 এর মধ্যে লিখতে হবে।
    • গুরুত্বপূর্ণ সাব-হেডিংস H3 ও H4 এর মধ্যে লিখতে হবে।
    • প্রয়োজনের অতিরিক্ত ট্যাগ লেখা থেকে বিরত থাকতে হবে।

    ৫। Internal Linking

    আপনি যখন কোন একটি বিষয়ে নুতন পোষ্ট লিখবেন তখন পোষ্টটির সাথে সম্পৃক্ত অন্য দু-একটি পোষ্ট Anchor Text হিসেবে বিভিন্ন কীওয়ার্ডের সাথে লিংক করে দিতে পারেন। এ বিষয়টি যদিও আপনাকে সরাসরি সার্চ ইঞ্জিন হতে ভিজিটর এনে দিতে সক্ষম হবে না কিন্তু সার্চ ইঞ্জিন বা অন্য কোথা হতে আগত ভিজিটরদের ব্লগের অন্য পোষ্টগুলিতে ভিজিট করানোর মাধ্যমে দীর্ঘ সময় অবস্থান করিয়ে Page View বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবে।

    তাছাড়া এটি আপনার ব্লগের Internal Backlink বাড়ীয়ে নিবে। তবে নতুন পোষ্টটির সাথে মিল নেই এমন কোন পোষ্ট লিংক করা থেকে বিরত থাকবেন। যদি অযথা যে কোন কীওয়ার্ডের সাথে লিংক করেন, তাহলে সার্চ ইঞ্জিন বট আপনার লিংকগুলো Spam হিসেবে ধরে নিতে পারে। সেই জন্য যখন কোন Internal লিংক তৈরি করবেন, সেটি যেন নতুন পোষ্ট এবং কীওয়ার্ডের সাথে মিল থাকে।

    ৬। Meta Description

    বর্তমানে যত ধরনের Meta Tag রয়েছে তাদের মধ্যে Meta Description টা হচ্ছে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ব্লগের পোষ্ট টাইটেলের পরেই সার্চ ইঞ্জিন Meta Description কে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। কেউ যখন সার্চ ইঞ্জিনে কোন বিষয়ে খোঁজে, তখন সার্চ ইঞ্জিন প্রথমে Post এর টাইটেল দেখার পাশাপাশি Meta Description দেখে থাকে। এ ক্ষেত্রে সার্চকারীর ঐ কীওয়ার্ডটি যদি টাইটেল কিংবা Meta Description এর মধ্যে পাওয়া যায়, তাহলে খুব সহজে আপনার ব্লগের পোষ্টগুলি সার্চ রেজাল্টের প্রথম পাতায় আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়ে যায়।
    অন পেজ এসইও: Meta Description
    সে জন্য পোষ্টের Meta Description টা অবশ্যই আপনার পোষ্টের বিষয়বস্তুর সাথে মিল রেখে গুরুত্বপূর্ণ কীওয়ার্ডের সমন্বয়ে হতে হবে। আমি অনেক ভালমানের ব্লগ দেখেছি যারা ব্লগের Meta Description ট্যাগটাকে কোন গুরুত্ব না দিয়ে পোষ্টের টাইটেলটি কপি করে Meta Description হিসেবে সেট করে রেখেছেন। এ ক্ষেত্রে আপনার ঐ Meta Description টি সার্চ ইঞ্জিনের কাছে কোন গুরুত্ব বহন করতে পারে না।

    Meta Description লেখার সঠিক নিয়ম

    • ​​Meta Description এর অবশ্যই টার্গেটেড কিওয়ার্ডস থাকতে হবে।
    • ১৫০ টির বেশি কিওয়ার্ডস ব্যবহার করা ঠিক নয়।
    • শুধুমাত্র কিওয়ার্ড না লিখে অর্থবহ বাক্য লেখার চেষ্টা করতে হবে।
    • টাইটেল ও ম্যাটা ডেসক্রিপশন যাতে এক না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

    ৭। Image Optimization

    Image হচ্ছে ব্লগ পোষ্টের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। ব্লগ পোষ্টে Image ব্যবহার করে যে কোন বিষয় সম্পর্কে পাঠকদের সুস্পষ্ট ধারনা দেয়া যায়। এমন কিছু পোষ্ট থাকে যে গুলিতে Image ব্যবহার না করলে পাঠকদের পরিষ্কার ধারনা দেয়া সম্ভবই হয় না। অন্যদিকে সার্চ ইঞ্জিনও আপনার ব্লগে সকল Image গুলিকে আলাদাভাবে সার্চ রেজাল্টে নিয়ে আসে।

    সাধারণত আপনি দেখে থাকেন যে, Google Search এর সার্চ রেজাল্টে Image নামে একটি ট্যাব থাকে। ওখানে ক্লিক করে কাঙ্খিত বিষয়ের অনেক Image পাওয়া যায়। আপনি যদি ব্লগের Image গুলি সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলী করে লিখেন তাহলে ঐ Image থেকে অনেক ভিজিটর পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরী হয়। ব্লগের Image এ বিভিন্ন ধররেন Alt Tag ও Caption এর মাধ্যমে Optimize করা যায়। কিভাবে পোষ্টের Image Optimize করতে হয় এ নিয়ে আমরা ইতোপূর্বে একটি বিস্তারিত পোষ্ট শেয়ার করেছি। পোস্ট পড়ে নিলে Image Optimization এর সকল বিষয় জানতে পারবেন।

    ৮। বড় পোস্ট লেখা

    এক সময় ছিল যখন পোস্ট বড় করে না লিখে ভাগ করে লেখার জন্য গুগল নিজে সাজেস্ট করত। কিন্তু সম্প্রতি গুগল নিজেই বলছে যে, একটি পোস্ট র‌্যাংক করানোর জন্য বড় আর্টিকেল লিখতে হবে। কাজেই আপনি কমপক্ষে ১ থেকে ২ হাজার কিওয়ার্ড এর সমন্বয়ে বড় করে পোস্ট লেখার চেষ্টা করবেন। তাছাড়া হাই ডিফিকাল্টি কিওয়ার্ড নিয়ে কোন পোস্ট পোস্ট লিখে সেটি র‌্যাংক করাতে চাইলে, আপনাকে অবশ্যই আরো বড় পোস্ট লিখতে হবে। কাজেই বর্তমান সময়ে যত বড় পোস্ট লিখতে পারবেন, গুগল সার্চ ইঞ্জিনে আপনার পোস্ট তত দ্রুত র‌্যাংক করবে।

    ৯। টাইটেল মডিফাই করে লেখা

    জনপ্রিয় এসইও ব্লগ Backlinko এর এসইও এক্সপার্ট Brian Dean টাইটেল মটিফাই করার পরামর্শ দিয়েছে। আমার কাছে তার ট্রিকসটি বেশ ভালো মনে হয়েছে। তার মতে পোস্টের টাইটলে কিছু মডিফাই করে আকর্ষণীয় করে দিলে সার্চ ইঞ্জিন ও রিডার উভয় টাইটেল দেখেতে পোস্ট পড়তে পছন্দ করে।

    যেমন ধরুন, পোস্টের টাইটেলে “Best”, “Top”, “Famous”, “Guide”, “Complete Guide”, “Review”, “Helpful” ইত্যাদি যুক্ত করে দিলে পোস্টটি দেখতে অধিক আকর্ষনীয় হয় এবং পাঠকের নজর কাড়তে পারে। কাজেই টাইটেল মডিফাই করার জন্য Brian Dean এর এসইও ট্রিকসটি ফলো করতে পারেন। 

    টাইটেল মডিফা করার সঠিক নিয়ম - যেমন

    • ​​Best ওয়ার্ডপ্রেস টুলস।
    • Top Famous ওয়ার্ডপ্রেস টুলস।
    • Best ওয়ার্ডপ্রেস টুলস ব্যবহার করার Complete Guide.

    ১০। পেজ স্পিড

    গুগল এর ভাষ্য অনুসারে ৩ সেকেন্ডের মধ্যে যদি একটি ওয়েবসাইট সম্পূর্ণ লোড নিতে সক্ষম না হয়, তাহলে সেই ওয়েবসাইট ৩০% ভিজিটর হারায়। অর্থাৎ ওয়েবসাইটের লোডিং টাইম ৩ সেকেন্ডের বেশি হলে, প্রতি তিন জনের একজন ভিজিটর বিরক্তবোধ করে। সুতারাং এসইও এর জন্য লোডিং টাইম অনেক বড় ইস্যু।
    অন পেজ এসইও: পেজ স্পিড
    পেজ স্পিড ‍গুগল এর একটি র‌্যাংকিং ফ্যাক্টর। আপনার ওয়েবসাইটের স্পিড কম হলে ভিজিটর হারানোর পাশাপাশি র‌্যাংকিং পিছিয়ে পড়বে। গুগল এলগরিদম এমনভাবে করা হয়েছে, যেখানে একজন ভিজিটর ওয়েবসাইট ভিজিট করার সময় যদি ঢুকতে না পারে তাহলে সেটা ব্ল্যাকলিষ্টিং করে সার্চে পেছনের দিকে নিয়ে যায়। গুগল পেজ স্পিড টুলস এবং Gtmetrix.Com থেকে আপনার ব্লগ/ওয়েবসাইট এর স্পিড টেস্ট করে নিতে পারবেন।

    পেজ স্পিড বৃদ্ধি করার নিয়ম 

    • মাঝারি সাইজের কমপ্রেস করা ছবি ব্যবহার করতে হবে।
    • ভালো হোস্টিং কিনতে হবে।
    • ভালোমানের CDN ব্যবহার করতে পারেন। 
    • থিমের মধ্যে ছবির পরিবর্তে সিএসএস স্টাইল ব্যবহরা করা।
    • ওয়ার্ডপ্রেস এর ক্ষেত্রে Cach Plugin ব্যবহার করা। 

    ১১. Keyword Density

    কীওয়ার্ড ডেনসিটি হল কত বার একটি ওয়ার্ড আপনার ব্লগের কোন একটি পোষ্টে আছে। মনে করন আপনার একটি ওয়েবসাইটের কোন পেইজে ১০০ শব্দ আছে, আর সেই ১০০ শব্দের মধ্যে যদি ৫ বার কীওয়ার্ড পাওয়া যায়, তাহলে বলা যাবে ৫ টাইমস কীওয়ার্ড ব্যবহার হয়েছে এবং সেখানে কীওয়ার্ড ডেনসিটি হল ৫%।

    একটি  পেইজের কীওয়ার্ড ডেনসিটি কত হওয়া উচিত সেটা সঠিকভাবে বলা একটু কঠিন কাজ। তবে আমি মনে করি একটি ওয়েবসাইটের কীওয়ার্ড ডেনসিটি সাধারণত ৫-৭% এর মধ্যে থাকা উচিত। মনে রাখবেন কীওয়ার্ড ডেনসিটি খুব বেশি রাখা যেমন ভাল নয় তেমনি খুব কম রাখাও ভাল নয়।

    ১২। কোয়ালিটি কনটেন্ট

    একটি ব্লগের Brilliant Content সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) ছাড়াই সার্চ রেজাল্টের শীর্ষে অবস্থান নিতে সক্ষম। আর ভালমানের কনটেন্টের পাশাপাশি যদি কেউ Proper SEO করতে পারেন, তাহলেত ব্লগের ট্রাফিক নিয়ে আর কোন চিন্তাই থাকে না। এ জন্য সার্চ ইঞ্জিনের ভাষায় একটা প্রবাদ আছে ''A Brilliant Content is King for all SEO".

    আপনি যদি সবসময় ব্লগে ভালমানের এমন কোন Unique Content শেয়ার করতে পারেন, যেটি নিয়ে ইন্টারনেটে এ যাবত লেখা হয়নি বা খুব কম শেয়ার করা হয়েছে, তাহলে এই বিষয়ে SEO না করলেও আপনার বিষয়টি সার্চ রেজাল্টের শীর্ষে থাকবে। তবে যেহেতু এটা আদৌ সম্ভব নয়, সেহেতু আপনাকে চেষ্টা করতে হবে সবার চাইতে ভালমানের কনটেন্ট পাবলিশ করার পাশাপাশি যথা নিয়মে SEO অনুসরণ করা।

    শেষ কথা

    আমরা On Page SEO এর সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি সম্পর্কে সহজে ধারনা দেয়ার পূর্ণাঙ্গ চেষ্টা করেছি। উপরের সকল বিষয়গুলি যথাযথভাবে অনুসরণ করে ব্লগিং চালিয়ে গেলে যে কেউ অল্প দিনে সার্চ ইঞ্জিন হতে ব্লগে পর্যাপ্ত ভিজিটর পেয়ে সাফল্যের ধারপ্রান্তে পৌছতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস। এ বিষয়ে যদি কারো কোন প্রকার প্রশ্ন থাকে কিংবা মনে কোন খটকা তৈরি হয়, তাহলে আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। কারণ আমরা প্রশ্নের মাধ্যমে যে কোন সমাধান দিতে অধিক পছন্দ করি।





    POST VIEWSl

    website counter








    Next Post Prev Post

    Facebook

    Get the latest article updates from this site via email for free!