হতয কর গর করবন করছন ন ত? বতল হয় যত পর করবন

একটি ছোট্ট ভুলের কারণে বাতিল হয়ে যেতে পারে কুরবানী

 

সকল কুরবানী দাতাদের জন্য অত্যন্ত জরুরী একটি বিষয়।

 

১০-১৫ মিনিট সময় বাঁচাতে গিয়ে আমাদের করা, ছোট্ট একটি ভুলের কারনে সম্পূর্নরুপে বাতিল হয়ে যেতে পারে আমাদের অত্যন্ত যত্নের সাথে আদায়কৃত আল্লাহর মহান হুকুম কুরবানী।

পশু জবেহ সম্পন্ন হবার পর, একটি ছোট তীক্ষ্ণ ছুড়ি দ্বারা জবেহের স্থানে খোঁচা দেয়ার একটা সিস্টেমের সাথে আমরা কমবেশি প্রায় সবাই পরিচিত, আমাদের অনেকেরই ধারনা এই কাজটার মাধ্যমে পশু দ্রুত মারা যায় এবং কষ্ট কম পায়।
এই ছোট্ট একটা ভুলই আমাদের কুরবানী বরবাদ করে দেবার জন্য যথেষ্ট।

পশু জবেহ সহীহ হবার শর্ত কি কি?

পশুর অন্তত মূল তিনটি রগ কেটে দেয়া। আর মূল তিনটি রগ কেটে দিলে, রক্তক্ষরনের স্বাভাবিক ফলস্বরুপ পশুটি খুব দ্রুত মারা যায়।

★আমরা একটু অতিরিক্ত তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে, পশুটার মেরুদন্ডের ভেতর তীক্ষ্ণ ছুড়ি ঢুকিয়ে “মেরুরজ্জু বা স্পাইনাল কর্ড” বিচ্ছিন্ন করে দ্রুত মেরে ফেলার চেষ্টা করি। স্পাইনাল কর্ড বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে পশুর মস্তিষ্ক, দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় আর এর ফলে পশুটি হার্ট এটাক করে এবং মারা যায়।
অনেক সময় এভাবে দ্রুত পশুটিকে শান্ত করতে গিয়ে, কুরবানীর উদ্দেশ্য ব্যাহত হয় এবং পশুটি জবেহ না হয়ে, হত্যা হিসেবে পরিগনিত হয়।

 

 

★চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতেও এই পন্থা অত্যন্ত গর্হিত এবং বিপদজনক। স্পাইনাল কর্ড কেঁটে গেলে পশুর দেহের মাংশপেশিতেই রক্ত জমাট বেঁধে যায় এবং ফলশ্রুতিতে গোশত দূষিত হয়ে পরে। এই গোশত ভক্ষনে ক্যান্সার, এইচবিএএস, সহ অন্তত ১৮ প্রকার জটিল রোগ সৃষ্টি হতে পারে।

এতএব,
কুরবানী দাতা সকলের কাছে বিনীত অনুরোধ থাকবে, ১০-১৫ মিনিট সময় বাঁচাতে গিয়ে, দয়া করে আপনার কুরবানী কে বরবাদ হয়ে যাবার সুযোগ দিবেন না।

 

যেসব প্রাণীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় তা হারাম

 

আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেছেন-

“তোমাদের জন্যে হারাম করা হয়েছে… যা কন্ঠরোধে মারা যায়, যা আঘাত লেগে মারা যায়, যা উচ্চ স্থান থেকে পতনের ফলে মারা যায়।” [সুরা মায়িদাহ, আয়াত : ৩]

 

রক্ত প্রবাহিত করা আবশ্যিক

 

রাফি ইবনে খাদিজ থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন –
“যা রক্ত প্রবাহিত করে দেয় এবং যে প্রাণীর উপর জবেহের সময় আল্লাহর নাম নেয়া হয় তা তোমরা খেতে পারো (হালাল)।”

[সহিহ বুখারী, খন্ড ৭, অধ্যায় – কিতাবুল জাবিহ (Hunting, Slaghtering), হাদিস নং- ৪০৬]

 

অর্থাৎ – এমন কিছু করা বৈধ নয় যা রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে অথবা শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ করে দেয়। এজন্য উত্তমভাবে জবেহ করতে হবে। কোনভাবেই স্পাইনাল কর্ডে(গলার অস্থিতে অবস্থিত) আঘাত করা যাবে না। জবেহের সময় কেবল জাগুলার ভেইন (গলার রগ) ও শ্বাসনালী কাটতে হবে।
স্পাইনাল কর্ডে আঘাত করলে কি হবে? ব্রেইনের সাথে শরীরের যোগাযোগ হয় স্পাইনাল কর্ডের মাধ্যমে। স্পাইনাল কর্ডে আঘাত করলে এই যোগাযোগ নষ্ট হয়ে যায়। আর ব্রেইনের সিগন্যাল ব্যাতিত হার্ট পাম্পিং সম্ভব নয়। এমন অবস্থায় পশু দ্রুত ফেইন্ট হয়ে যাবে,কোমায় চলে যাবে, হার্ট পাম্পিং বন্ধ হয়ে যাবে যার কারনে শরীর থেকে যথেষ্ট রক্ত বের হবে না।
একইসাথে ফুসফুসও বন্ধ হয়ে যাবে। যা শ্বাসরোধ করে হত্যার মতই। এটাকে বলি বা শিরচ্ছেদের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। অর্থাৎ এটা জায়েজ নেই। জায়েজ না হবার দলিল হল উপরে উল্লেখিত কোরআনের আয়াত ও হাদিস।
___________

স্বাস্থ্যগত সমস্যাঃ রক্ত রোগ জীবাণুর বাহক। রক্ত ঠিকমত বাহির না হলে মাংস সহজেই নষ্ট হয়ে যায়, স্বাদ কমে যায় এবং ঠিকমত রান্না না করলে মানবদেহে রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে।
অনেকে পশুর ছোড়াছুড়ি দেখে মনে করে এটা ব্যাথা পাচ্ছে। আসলে তা ঠিক নয়। জবেহের অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই এটা সেন্স হারিয়ে ফেলে। এটা তখন আর ব্যাথা পায় না। ছুড়াছুড়ি করে শরীর থেকে রক্ত বের হয়ে যাওয়ার কারনে। এতে পেশির সংকোচন প্রসারণ ঘটে। অনেক সময় দেখবেন পশুর শরীরের কাটা অংশও নড়াচড়া করে। এটা অবশ্যই ব্যাথার জন্য নয়। বরং স্পাইনাল কর্ডে আঘাতের ফলে পশু প্রচন্ড ব্যাথা পায়।
এই কাজের জন্য হুজুরগণ সাধারণত দুই ছুড়ি ব্যবহার করেন। একটা জবেহ করার জন্য। আরেকটি ঘাড়ের স্পাইনাল কর্ড কাটার জন্য।
প্রশ্ন থাকে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ওয়া আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও সাহাবিরা কি এভাবে জবেহ করতেন?
বহু হাদিস থেকে – আমরা জানতে পাই রাসুলুল্লাহ (সঃ) একটি ছুড়ি দিয়েই পশু জবেহ করেছেন। বুখারি ও মুসলিমে এ ধরনের প্রচুর হাদিস রয়েছে।

দুই ছুড়ি দিয়ে অদ্ভুত এই জবেহের সিস্টেম কে আবিষ্কার করল?
আমাদের এই ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ আসলেই অনেক ক্রিয়েটিভ। তারা প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ক্রিয়েটিভ না হলেও ধর্মের ক্ষেত্রে তাদের ক্রিয়েটিভিটির তুলনা হয় না। তারা ভুলে যায় ধর্মীয় বিধানে আমাদের ক্রিয়েটিভিটির স্থান নেই। সেটাকে বলে বিদআত।
___________

জবেহের সময় কি বলতে হবে?

 

জবেহের সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ আবশ্যিক। (সূরা আল আন-আম, আয়াত : ১২১)

 

রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম) জবেহের সময় বলতেন – “বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার।”

[সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম]

 

 

যেসব জন্তুর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয় না, সেগুলো থেকে ভক্ষণ করো না; এ ভক্ষণ করা গোনাহ। নিশ্চয় শয়তানরা তাদের বন্ধুদেরকে প্রত্যাদেশ করে-যেন তারা তোমাদের সাথে তর্ক করে। যদি তোমরা তাদের আনুগত্য কর, তোমরাও মুশরেক হয়ে যাবে।”

(সূরা আলআন–আম, আয়াত : ১২১)

 

 

আদাম ইবন আবূ ইয়াস (রা:) আনাস (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুটি সাদাকালো বর্ণের ভেড়া দ্বারা কুরবানী করেছেন। তখন আমি তাঁকে দেখতে পাই তিনি ভেড়া দুটোর পার্শ্বদেশে পা রেখে “বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার” – পড়ে নিজের হাতে সে দুটোকে যবাহ করেন।

[সহিহ বুখারী, খন্ড ৭, অধ্যায় ৬৮ (কুরবানি), হাদিস নং- ৪৬৫] (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৯ম খন্ড, হাদিসঃ ৫১৬৭)

পশু জবেহের ক্ষেত্রে পশুকে সবচেয়ে কম কষ্ট দেয়া এবং ছুরি ধার করে নেয়া আবশ্যক

 রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন –

“…যখন জবেহ করবে তখন উত্তম পন্থায় জবেহ করবে। তোমাদের প্রত্যেকে যেন তার ছুরি ধার দিয়ে নেয় এবং তার জবেহকৃত জন্তুকে শান্তি প্রদান করে (অহেতুক কষ্ট না দেয়) ।”

[সহিহ মুসলিম, চতুর্থ খন্ড, হাদিস নং – ৪৮৯৭ ও ৪৮৯৮]

 

উত্তমরূপে পশু জবেহ করতে হবে।শ্বাসনালী সহ ধমনী ও শিরা কেটে দিতে হবে কিন্তু স্পাইনাল কর্ড অক্ষত রাখতে হবে।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন শয়তানের কুরবানিকে। এটা হল পশুর গলার কিছুটা কেটেই মৃত্যুর জন্য ছেড়ে দেয়া জাগুলার ভেইন বা গলার শিরা না কেটে।

[আবু দাউদ, বই – ১৫, হাদিস নং – ২৮২৮]

পশু জবাই করার পর সেই পশু সম্পূর্ণ মারা যাওয়ার আগেই চামড়া ছাড়ানো উচিৎ নয়।

The post হত্যা করে গরু কুরবানী করছেন না তো? বাতিল হয়ে যেতে পারে কুরবানী appeared first on Trickbd.com.








POST VIEWSl

website counter








Next Post Prev Post

Facebook

Get the latest article updates from this site via email for free!