মার্কেটিং কি?
এফিলিয়েট মার্কেটিং কি?
কিভাবে এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করবেন?
আপনি হয়তো ইতোপূর্বে আপার বন্ধু বান্ধব ও ব্ভিন্ন ব্লগ পড়ে জানতে পেরেছেন এফিলিয়েট মার্কেটিং করে হাজার হাজার ডলার আয় করা যায়। আপনি একদম ঠিক শুনেছেন। আপনার দক্ষতা ও ভীজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে পরিশ্রম করলে আপনিও একসময় এফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনলাইন হতে মাসে হাজার ডলার ইনকাম করতে পারবেন। কিভাবে এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করবেন সে বিষয়ে আলোচনা করা পূর্বে আমি আপনাকে আরেকটি বিষয় ক্লিয়ার করে নেব।এফিলিয়েট মার্কেটিং মূল কাজ হচ্ছে পন্যের প্রচার ও প্রসারের মাধ্যমে ক্রেতাদের কাছে পন্য পৌছে দেওয়া। একটি উদাহরনের মাধ্যমে আমি বিষয়টি আরো ক্লিয়ার করার চেষ্টা করছি। ধরুন আপনি বাস্তব জীবনে কোন একটি কোম্পানির সাথে চুক্তি করলেন যে, কোম্পানির নিকট হতে বিভিন্ন ধরনের একশতটি পন্য নিবেন এবং সেগুলো আপনি বিক্রয় করে দেবেন। বিনিময়ে প্রত্যেকটি পনের বিক্রয়মূল্যের উপর কোম্পানি আপনাকে ১৫% হারে কমিশন দেবে। এ ক্ষেত্রে আপনি ঐ একশতটি পন্য ক্রেতাদের কাছে পৌছে দেওয়ার জন্য কি কি পন্থা অবলম্বন করবেন? আপনি পন্যগুলো বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে ক্রেতাদের কাছে পৌছাবেন এবং পন্যগুলোর ভালো দিক তুলে ধরবেন। এতেকরে ক্রেতা আপনার পন্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ক্রয় করবে।
আমি আরেকটি উদাহরনের মাধ্যমে বিষয়টি আরো পরিষ্কার করছি। আপনি হয়ত গ্রাম গঞ্জের বিভিন্ন হাঠে ও বাজারে বিভিন্ন ধরনের কোম্পানির প্রোডাক্ট এর প্রচার করতে দেখেছেন। এ ক্ষেত্রে দেখা যায় একটি বাজারে কাঙ্খিত পন্যের প্রমোটকারী বিভিন্ন গান বাজনার আয়োজন করে প্রথমে লোকজ জড় করে। গান বাজনার এক পর্যায়ে লোকজন জমা হলে তাদের পন্যগুলির ভালো দিক তুলে ধরে। যার ফলে দেখা যায় খুব সহজে প্রমোটকারী অনেক পন্য বিক্রয় করতে পারে।
ঠিক একইভাবে আপনি অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন ওয়েবসাইট হতে যে প্রোডাক্ট নেবেন প্রথমে আপনাকে চিন্তা করতে হবে আপনি সেই প্রোডাক্ট কিভাবে কাষ্টমারদের হাতে পৌছাতে পারবেন। এই কাজটি আপনি বিভিন্নভাবে করতে পারেন। আপনার একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগ থাকলে সেই ব্লগে ঐ প্রোডাক্টগুলোর রিভিউ তৈরি করে পন্যের লিংক শেয়ার করার মাধ্যমে ক্রেতাদের সেই পন্য ক্রয়ের জন্য কোম্পানির ওয়েবসাইটে পৌছে দিতে পারেন। তাছাড়া ফেইসবুক, টুইটার, ইউটিউব ও ইমেইল সহ বিভিন্ন সোসিয়াল মিডিয়া সাইটে লিংক শেয়ার করেও পন্য ক্রয়ের জন্য ক্রেতাদের উৎসাহিত করতে পারেন। তবে আপনারা যেই পদ্ধতিতে অবলম্বন করেন না কেন প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে আপনার প্রচুর পরিমানে জনপ্রিয়তা থাকতে হবে। প্রথম দিকে জনপ্রিয়তা না থাকলেও কাজের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জন করে নিতে হবে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য ভালো প্লাটফর্ম কোনটি?
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য লক্ষ লক্ষ কোম্পানি রয়েছে। তন্মধ্যে কিছু ভালোমানের কোম্পানি রয়েছে যেগুলোর প্রচুর পরিমানে প্রোডাক্ট রয়েছে এবং তারা ভালোমানের হারে মার্কেটারদের কমিশন পরিশোধ করে। নিচে কয়েকটি ভালোমানের এফিলিয়েট কোম্পানির নাম তুলে ধরছি যেগুলোতে কাজ করে দীর্ঘদিন টাকা ইনকাম করতে পারবেন।- ShareASale Affiliates.
- Amazon Associates. (সবচাইতে বেশী পরিচিত)
- eBay Partners.
- Shopify Affiliate Program.
- Clickbank.
- Rakuten Marketing Affiliates.
- Leadpages Partner Program.
- StudioPress Affiliate Website.
কিভাবে বেশী আয় করা যাবে?
প্রথমেই বলে রাখছি আয় করার জন্য আপনাকে অবশ্যই ধৈর্য্য ধারন করে দীর্ঘ দিন পরিশ্রম করতে হবে। তাহলে ধীরে ধীরে সফলতা আপনার হাতে ধরা দেবে। তবে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় বড়ানোর জন্য অবশ্য কিছু টেকনিক অবলম্বন করতে হয়। সাধারণত অনলাইন হতে মানুষ যে সকল পন্য বেশী কিনে থাকে সেগুলো নিয়ে কাজ করলে সহজে আয় বৃদ্ধি করা যায়। আপনি যদি এমন জিনিস পছন্দ করেন যেগুলোর অফলাইনে চাহিদা রয়েছে কিন্তু অনলাইনে চাহিদা খুব কম তাহলে আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং করে সফল বা লাভবান হতে পারবেন না। এ জন্য যে সকল পন্যের অনলাইনে প্রচুর পরিমানে চাহিদা রয়েছে সেই সকল পন্যের রিভিউ করে লিংক শেয়ার করলে সহজে বেশী টাকা ইনকাম করা যাবে।তবে আরেকটি বিষয় ক্লিয়ার করে নিচ্ছি যে, আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটর এর কনটেন্ট ইংরেজী হলে আয় বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। কারণ বাংলাদেশের মানুষ এখানো পর্যন্ত অনলাইন হতে তেমন কোন প্রোডাক্ট কেনাকাঠা করে না। কাজেই আপনি বাংলা ভাষায় ব্লগিং করে এফিলিয়েট মার্কেটিং করলে সফল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এ ক্ষেত্রে ইংরেজী ভাষায় আর্টিকেল শেয়ার করে চাহিদা সম্পন্ন প্রোডাক্ট নিয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারলে খুব অল্প দিনে বেশী টাকা আয় করতে পারবেন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে আমাদের পরামর্শঃ
কাজ শুরু করার আগে আপনার একটি নিজেস্ব ব্লগ কিংবা ওয়েবসাইট তৈরি করে নিবেন। আপনি যদি ফ্রিতে ব্লগ তৈরি করতে চান তাহলে অবশ্যই গুগল ব্লগার দিয়ে একটি ব্লগ তৈরি করে নিতে পারেন। তবে ব্লগ ডিজাইন ও সাজানো শেষ হওয়ার পর একটি টপ লেভেলের ডট কম কিংবা ডট নেট ডোমেইন সেট করে নিবেন। তারপর আপনি যে প্রোডাক্ট সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন সেই প্রোডাক্ট এর রিভিউ তৈরি করতে থাকবেন। ব্লগের যখন ১৫/২০ টি পোষ্ট হয়ে যাবে তখন ব্লগের এসইও সংক্রান্ত কাজ শুরু করবেন। কারণ এসইও ছাড়া কোনভাবে ব্লগের প্রচুর পরিমানে ট্রাফিক পাওয়া সম্ভব হবে না। আর আপনার পন্য ক্রেতাদের কাছে পৌছে দেওয়ার জন্য ব্লগে অবশ্যই ভিজিটর প্রয়োজন হবে। আপনার ব্লগে যত বেশী ভিজিটর আসবে আপনার পন্য তত বেশী বিক্রয় হবে।তাছাড়াও আপনি যদি ফেইসবুক পেজ, ফেইসবুক গ্রুপ, ফেইসবুক ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ, টুইটার, ইউটিউব চ্যানেল, ওয়াটসআপ চ্যাট ম্যাসেঞ্জার সহ আরো অন্যান্য সোসিয়াল মিডিয়াতে প্রচুর পরিমানে জনপ্রিয়তা সম্পন্ন হন তাহলে সেগুলোতেও আপনার ব্লগের লিংক ও সরাসরি পন্যের লিংক শেয়ার করেও পন্য প্রমোট করে এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। তবে যেটাই করেন না কেন আপনাকে পরিশ্রমের মাধ্যমে কাজ করে সফলতা ও ইনকাম বৃদ্ধি করতে হবে। তা না হলে পরিশ্রম ব্যতীত কোনভাবে ইনকাম করা সম্ভব হবে না।