ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করার উপায়

ইউটিউব মনিটাইজেশন ২০২০: কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল থেকে টাকা আয় করবেন? ইউটিউব কিভাবে টাকা দেয়? কিভাবে ইউটিউব মনিটাইজেশন করে আয় করা যায়? ইউটিউবে আয়ের হিসাব সহ ইউটিউব প্রতি এক ভিউতে কত টাকা দেয় ইত্যাদি বিষয় জানতে হলে আজকের পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। এই পোস্টে একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম থেকে শুরু করে একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে টাকা আয় করে আয়ের টাকা ঘরে নিয়ে আসার বিস্তারিত নিয়ম শেয়ার করব।
ইউটিউব মনিটাইজেশন ২০২০: ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করার উপায়




অনলাইনে ঘরে বসে আয় করার অনেক উপায় আছে। আপনার যদি ইচ্ছা থাকে তাহলে ঘরে বসেই খুব সহজে কিছু টাকা ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করতে পারবেন। সম্প্রতি সময়ে অনলাইন থেকে টাকা আয় করার মাধ্যম গুলোর মধ্যে সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ইউটিউব। কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়া শুধুমাত্র ভিডিও আপলোড করে ইউটিউব চ্যানেল থেকে টাকা আয় করা যায়। আপনি সামান্য চেষ্টা করলে খুব সহজে YouTube চ্যানেল থেকে টাকা আয় করতে পারবেন।




ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করার উপায়

একজন নতুন বা নরমাল ইউটিউবার এর আয়ের প্রধান উৎস হচ্ছে গুগল এডসেন্স। একটি ইউটিউব চ্যানেল যখন ১০০০ সাবস্ক্রাইবার ও ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম হয় তখন ইউটিউবার তার চ্যালেন এর ভিডিও মনিটাইজ করার জন্য গুগল এডসেন্স এর আবেদন করে। গুগল এডসেন্স আবেদন যাচাই করার পর সেই ইউটিউব চ্যানেলটি মনিটাইজ করার মত উপযুক্ত মনে করলে বা ভালোমানের ভিডিও থাকলে তখন চ্যানেলটিতে এডসেন্স অনুমোদন করে। অনুমোদন পাওয়ার পর সেই ইউটিউব চ্যানেল এর ভিডিও যখন কেউ দেখে তখন ভিডিওতে বিজ্ঞাপন শো হতে থাকে। তখন থেকে বিজ্ঞাপন ভিউ হিসাব করে সাধারণত ইউটিউব একজন ইউটিউবারকে টাকা দিয়ে থাকে। এছাড়া একজন জনপ্রিয় ইউটিবার নিম্নের উপায় হতে আয় করতে পারেন।

বাংলা ইউটিউব চ্যানেল থেকে কি আয় করা যায়?

গুগল এডসেন্স বাংলা ভাষায় এডসেন্স সাপোর্ট করার পূর্বে অর্থাৎ ২০১৮ সালের পূর্বে ইউটিউব থেকে বাংলাদেশী ইউটিউবাররা টাকা আয় করতে পারত না। তবে এডসেন্স বাংলা ভাষা সাপোর্ট করার পর হতে ভিডিও মনিটাইজ করার মাধ্যমে ভিডিওতে এডসেন্স বিজ্ঞাপন শো করিয়ে বাংলা ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করা সম্ভব হচ্ছে। সুতরাং আপনি বাংলা ভাষায় বিভিন্ন টিউটরিয়াল ভিডিও তৈরি করে ইউটিউব চ্যানেল থেকে সহজে টাকা আয় করতে পারবেন।

কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করবেন?

ইউটিউব চ্যানেল থেকে টাকা আয় করতে হলে প্রথমে আপনার একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে হবে। তারপর আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি ভালোভাবে সাজাতে হবে। আপনার তৈরি করা ইউটিউব চ্যানেলটি সাজানো হয়ে গেলে চ্যানেলটিতে ভিডিও আপলোড করার জন্য ভিডিও তৈরি করতে হবে। আপনার ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করার জন্য কোন চিন্তা করতে হবে না। কারণ ভিডিও আপলোড করার জন্য ইউটিউবকে কোন ধরনের টাকা দিতে হয় না। সম্পূর্ণ ফ্রিতে আপনি আনলিমিটেড সাইজের ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করতে পারবেন।

০১। ইউটিউব চ্যালেন খোলা (কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলবেন?):

একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলা খুবই সহজ কাজ। আপনার হাতে থাকা মোবাইল দিয়ে আপনি খুব সহজে মাত্র ৫ মিনিটে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে নিতে পারবেন। তবে আপনার যদি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থাকে তাহলে ইউটিউব চ্যানেল খোলা ও চ্যানেল সাজানোর আপনার জন্য আরো সহজ হবে।
কিভাবে একটি একটি প্রফেশনাল YouTube চ্যানেল খুলতে হয় সে বিষয়ে আপনার কোন ধারনা না থাকলে আপনি আমাদের ব্লগের সাহায্য নিতে পারেন। কারণ কিভাবে একটি প্রফেশনাল YouTube চ্যানেল খুলতে হয় সে বিষয়ে আমাদের ব্লগে একটি বিস্তারিত পোস্ট শেয়ার করা আছে। আমরা এই পোস্টে প্রফেশনাল YouTube চ্যানেল খোলার লিংকটি শেয়ার করে দিব। আমি আশাকরি আপনি পোস্ট থেকে বিস্তারিত জেনে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে নিতে পারবেন।

ইউটিউব চ্যানেল খুলতে কি কি লাগে?

প্রত্যেকটি কোম্পানির যেমন কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম থাকে ঠিক তেমনি ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য বা ইউটিউবে কাজ করার জন্য কিছু নিয়ম মানতে হয়। কিছু বেসিক রিকুয়ারমেন্ট ছাড়া আপনি ইউটিউবে চ্যানেল খুলতে পারবেন না ইউটিউবে কাজ করতে পারবেন না। একটি ইউটিউব চ্যালেন খোলার জন্য সাধারণত নিচের জিনিসগুলো লাগে।
  • আপনার বয়স আঠার হতে হবে।
  • আপনার একটি জিমেইল আইডি লাগবে।
  • একটি মোবাইল নাম্বার প্রয়োজন হবে।
  • ইউটিউব এর প্রোগ্রাম পলিসি মানতে হবে (এটা অনেক বড় বিষয়)।

০২। ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করাঃ

আপনার ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করার জন্য প্রথমে আপনাকে ভালোমানের ভিডিও তৈরি করতে হবে। ভিডিও তৈরীর জন্য আপনি দুটি উপায় অবলম্বন করতে পারেন। প্রথমটি হলো ভিডিও ক্যামেরা অথবা স্মার্টফোনের ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও তৈরি করে YouTube এ আপলোড এবং ২য়টি হলো কম্পিউটার অথবা মোবাইলের সাহায্য বিভিন্ন ধরনের টিউটিরিয়াল ভিডিও তৈরি করে করে YouTube এ আপলোড। তবে ভিডিও তৈরির আগে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে, আপনার ভিডিওটি অবশ্যই মজাদার বা শিক্ষনীয় ও ভালোমানের হতে হবে। অন্যের ভিডিও নকল করে কিংবা সামান্য পরিবর্তন করে কাজটি করা যাবে না। তাহলে আপনি YouTube এর কাছে কপিরাইটের দায়ে ফেসে যেতে পারেন।

কোন ধরনের ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করনে?

ভিডিও তৈরি শুরু করার পূর্বে আপনাকে ভেবে চিন্তে ঠিক করতে হবে আপনি কোন বিষয়ে ভালো জানেন, বুঝেন ও কোন বিষয়ে আপনার কাজ করার আগ্রহ আছে? আপনি যে বিষয়ে ভালো জানেন এবং যে বিষয়ে কাজ করার আগ্রহ রাখেন অবশ্যই সেই বিষয় নিয়ে ভিডিও তৈরি করতে হবে। আপনি কোন বিষয় যখন জেনে বুঝে ভালোভাবে ভিডিও তৈরি করবেন তখন মানুষ আপনার ভিডিও দেখে উপকৃত হবে এবং আপনার ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও পছন্দ করার কারনে আরো বেশি করে দেখবে।
ভিডিও তৈরি ক্ষেত্রে আপনার ভিডিও এর টপিক নির্ধারনের ক্ষেত্রে কিছু ট্রিকস ফলো করতে হবে। কারণ ট্রিকস অনুসরণ না করে শুধুমাত্র ভিডিও তৈরি করে গেলে আপনার ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করা সত্বেও ভিউ হবে না। সে জন্য ভিডিও এর ভিউ পাওয়া জন্য ইউটিউবে মানুষের চাহিদা আছে এমন ধরনের ভিডিও তৈরি করতে হবে।

আপনার ইউটিউব চ্যানেলে এমন টপিক নিয়ে ভিডিও বানাতে হবে যা বর্তমান সময়ের লোকজন ইন্টারনেটে ও ইউটিউবে প্রচুর পরিমানে সার্চ করে। সে জন্য আপনার ইউটিউব চ্যানেল এমন বিষয়ে বানাবেন যে বিষয়ে আজকাল মানুষের বেশি পরিমানে চাহিদা ও রুচি রয়েছে। তবেই আপনার তৈরি করা ভিডিও বেশি পরিমানে লোকেরা দেখার সুযোগ হবে। আর আপনার ভিডিও যত বেশি মানুষ দেখবে আপনার আয় তত বেশি বাড়বে। পক্ষান্তরে আপনি যদি এমন বিষয় নিয়ে ভিডিও আপলোড করেন যেই বিষয়ে নিয়ে ইন্টারনেটে ও ইউটিউবে কোন সার্চ হয় না, তাহলে সেই ধরনের ভিডিও আপলোড করেও আপনি কোন লাভবান হতে পারবেন না। কাজেই ভিডিও এর টপিক নির্ধারণের ক্ষেত্রে আপনাকে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে ঠিক করে নিতে হবে।

ইউটিউব চ্যানেল কি বিষয়ে বানাবেন?

আমি আগেই বলেছি ইউটিউব চ্যানেলের সফলতা আপনার চ্যানেলের টপিক এর উপর অনেকাংশে নির্ভর করবে। সে জন্য কি বিষয়ে ভিডিও তৈরি করলে আপনি লাভবান হবে সে বিষয়ে জেনে নেওয়া জরুরী। আমি নিচে কয়েকটি জনপ্রিয় ইউটিউব টপিক শেয়ার করে দিচ্ছি যেগুলো নিয়ে কাজ করতে পারলে আপনি সহজে ভিডিও এর ভিউ বৃদ্ধি করে ইউটিউব থেকে বেশি টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
  1. Technology (টেক): বর্তমান যুগ ইন্টারনেট ও টেকনোলজির যুগ। ব্লগিং ও ইউটিউব উভয় ক্ষেত্রে টেকনোলজি রিলেটেড টপিক এর অনেক মূল্য রয়েছে। কারণ টেক বিষয়ে ভিডিও তৈরি করলে ইউটিউবে আপলোড করলে বেশি পরিমানে ভিউ হয় এবং ভিডিওতে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি বিজ্ঞাপন শো হওয়ায় অন্যান্য টপিক এর চাইতে টেকনোলজি টপিক এর ইউটিউব চ্যানেলের ইনকাম বেশি হয়।
  2. Gaming: ইউটিউবে গ্যামিং চ্যানেল এর প্রচুর ডিমান্ড রয়েছে। ইন্টারনেট বিশ্বে যত ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে তাদের মধ্যে জনপ্রিয়তা ও সাবস্ক্রাইবারের দিক থেকে গ্যামিং চ্যানেল ২য় অবস্থানে রয়েছে। কারণ ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেলের মধ্যে গ্যামিং চ্যানেলগুলো অধিক জনপ্রিয় হয়ে থাকে।
  3. Product Reviews: প্রোডাক্ট কমন একটি বিষয়। আমরা মানুষ হিসেবে কোন না কোন প্রোডাক্ট আমাদের ব্যবহার করতে হয়। ডিজিটাল প্রোডাক্ট থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় যে কোন ধরনের প্রোডাক্ট রিভিউ নিয়ে চ্যানেল তৈরি করে ভিডিও আপলোড করতে পারলে অল্পদিনে সফল হতে পারবেন। তাছাড়া প্রোডাক্ট রিভিউ করার কাজটা তুলনামূলকভাবে সহজ হয়।
  4. Tutorials: আপনি যেকোন বিষয়ে একজন টিউটর হতে পারেন। মানুষ হিসেবে আপনি কোন না কোন বিষয়ে অবশ্যই অভীজ্ঞতা রাখেন। সে জন্য আপনি যে বিষয়ে ভালো জানেন সেই বিষয়ে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করে টিউটরিয়াল ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। তবে টেক বিষয়ে টিউটরিয়াল ভিডিও তৈরি করতে পারলে সহজে সফলতা পাওয়া যায়।
  5. Food: ইউটিউব চালু হওয়ার পর থেকে ব্লগিং এর ক্ষেত্রে ফুড টপিকটি অনেক পিছিয়ে পড়েছে। কারণ একটি খাবার কিভাবে তৈরি করতে হয় সেটি ভিডিওতে যেভাবে দেখানো সম্ভব হবে ব্লগে লিখে সেটি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা যাবে না। আপনি যদি মহিলা বা গৃহিনী হয়ে থাকেন কিংবা ভালো ভালো রেসিপি রান্না করতে পারেন, তাহলে বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরির ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করে সহজে জনপ্রিয়তা অর্জন করে নিতে পারবেন।
  6. Fashion and Beauty: ফ্যাশন ও সাজগোজ করতে কার না ভালো লাগে। সব বয়সের পুরুষ মানুষ থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মেয়েরা ফ্যাশন জিনিসটি অধিক পছন্দ করে। আপনি যদি ফ্যাশন ডিজাইনার হন বা কোন বিউটি পার্লারে কাজ করেন কিংবা ফ্যাশন করতে পছন্দ করেন, তাহলে বিভিন্ন ফ্যাশন ও বিউটি টিপস শেয়ার করে ইউটিউব থেকে টাকা আয় করতে পারবেন।
  7. Weight loss & Healthy Living: এই টপিককে সংক্ষেপে লাইফস্টাইল বলা হয়। আপনি যদি বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম, ইয়গা, জিম ও হেলথ বিষয়ে টিপস শেয়ার করতে পারেন, তাহলে খুব অল্পদিনে আপনার ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার বৃদ্ধি করে নিতে পারবেন। আপনি উদাহরণ হিসেবে বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় ইউটিউবার “ডাঃ জাহাঙ্গির কবীর” স্যারকে অনুসরণ করতে পারেন। যদিও তিনি একজন ইউটিউবার হিসেবে নিজেকে দাবি করেন না, তবু আপনি চিন্তা করে দেখুন তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে প্রতিদিন প্রায় ৫-১০ হাজার নতুন সাবস্ক্রাইবার বৃদ্ধি হয়। তাছাড়া আমি এমন একটি ইউটিউব চ্যানেল দেখেছি যেটি "Wight Loss" বিষয়ে মাত্র একটি ভিডিও শেয়ার করে ৬ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার অর্জন করে নিয়েছে।
  8. Funny Video: মজা করতে কার না ভালো লাগে। কোন মানুষের যখন মন খারাপ থাকে তখন সে তার মন ভালো করার জন্য মজার কোন জিনিসের আশ্রয় নেয়। এ ধরনের ভিডিও প্রচুর জনপ্রিয় হয়ে থাকে। কারণ Funny Video সবশ্রেণীর মানুষ দেখে থাকে।
  9. Travel: আপনি যদি ভ্রমন প্রিয় লোক হন, তাহলে ইউটিউবার হওয়া আপনার জন্য সহজ হয়ে যায়। কারণ এ ক্ষেত্রে আপনাকে কষ্ট করে ভিডিও তৈরি করতে হয় না। আপনি যখন কোন দর্শনিয় স্থান ভিজিট করবেন তখন সেই ভিডিওগুলো আপনার ক্যামেরা বন্দি করলেই আপনার ভিডিও তৈরি করার কাজ হয়ে যায়। তাছাড়া এ ধরনের ভিডিও খুবই জনপ্রিয় হয়।
  10. Animals:সাধারণত এ ধরনের ইউটিউব চ্যানেলগুলোও ভ্রমন প্রিয় মানুষের জন্য হয়ে থাকে। বিশেষ করে যারা ফটোগ্রাফার তারা এ ধরনের ইউটিউব চ্যানেল করে থাকে। আপনি যদি একজন ফটোগ্রাফার হন তাহলে বিভিন্ন পশু পাখি ও জীব জন্তুর ভিডিও আপলোড করে ইউটিউব চ্যানেল থেকে টাকা আয় করতে পারবেন।

০৩। ইউটিউব মনিটাইজেশনঃ

ইউটিউব এর নতুন পলিসি অনুসারে ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজ করার জন্য আপনার ইউটিউব চ্যানেলে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার ও এক বছরে ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম থাকতে হবে। অতএব ইউটিউবে এক বছরে মিনিমাম ৪০০০ ঘন্টা ভিডিও ভিউ হওয়ার পর আপনি ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজেশন করে ইউটিউব থেকে টাকা আয় করা শুরু করতে পারবেন। তবে গত ২০১৯ সালের পূর্বে ইউটিউব ভিডিও মনিটাইজ করার জন্য কোন ধরা বাধা নিয়ম ছিল না। কিন্তু ইউটিউব ২০১৯ সালে তাদের প্রোগ্রাম পলিসি আপডেট করে।

কিভাবে ইউটিউব মনিটাইজেশন করবেন?

আপনার ইউটিউব চ্যানেলে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার ও এক বছরে ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম পূর্ণ হলে আপনার চ্যানেল হতে Channel Icon > Creator Studio > Monetization গেলে মনিটাইজ করার অপশন পাবেন। তখন ইউটিউব আপনাকে মনিটাইজেশন অপশন এলিজিবল দেখাবে। যখন আপনার মনিটাইজেশন অপশন এলিজিবল হবে তখন আপনার ইউটিউব চ্যানেলটির মনিটাইজেশন অপশন Enable করে নিতে হবে। মনিটাইজেশন অপশন Enable করার পর আপনার ইউটিউব চ্যানেল দিয়ে গুগল এডসেন্স এর জন্য আবেদন করতে হবে।

আপনার ইউটিউব চ্যানেল দিয়ে এডসেন্স একাউন্ট খোলার জন্য প্রথমে আপানার ইউটিউব চ্যানেল এর লিংকটি কপি করতে হবে। তারপর Google AdSense এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের এই লিংকে ক্লিক করে ফরম ফিলআপ করে গুগল এডসেন্স এর জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদন করলে ‍এডসেন্স আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি এডসেন্স এর সাথে যুক্ত করে দেবে।

এগুলো অবশ্যই পড়বেন - 
তবে এডসেন্স এর আবেদন করার সাথে সাথে আপনার ভিডিও মিনিটাইজ করতে পারবেন না। গুগল এডসেন্স এর জন্য আবেদন করার পর গুগল আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি ৫/৭ দিনের মধ্যে রিভিউ করবে। রিভিউ করে আপনার চ্যানেলকে উপযুক্ত মনে করলে এডসেন্স আপনার ইউটিউব চ্যানেলকে অনুমোদন দেবে। কেবল মাত্র এডসেন্স অনুমোদন হলে আপনার ভিডিও মনিটাইজ করে এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন আপনার ভিডিওতে দেখিয়ে ইউটিউব হতে টাকা আয় করতে পারবেন।

এখন আপনি নিয়মিত নতুন নুতন ভিডিও আপলোড করতে থাকবেন। আপলোড হওয়ার পর ভিডিওটির নিচের দিকে Monetized অপশন দেখতে পাবেন। এখানে Monetize with ads অপশনে ঠিক চিহ্ন দিয়ে দিলেই আপনার ভিডিওটিতে এখন থেকে Google বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখাবে। তবে সাবধান কোন প্রকার কপি করা ভিডিও আপলোড করবেন না। তাহলে ইউটিউব যে কোন সময় আপনার Monetized অপশন Disable করে দেবে।

কিন্তু গুগল এডসেন্স আপনার আবেদন অনুমোদন না করে রিজেক্ট করে দিলে আপনি ভিডিওতে বিজ্ঞাপন শো করতে পারবেন না। এ ক্ষেত্রে আপনি কিছুদিন আরো ভালো ভালো ভিডিও আপলোড করে ১০-১৫ দিন পর পুনরায় এডসেন্স পাওয়ার জন্য আবেদন করবেন। আপনার ইউটিউব চ্যানেলে ভালোমানের ভিডিও থাকলে এডসেন্স আপনার আবেদন অনুমোদন করবে।

০৪। Youtube থেকে টাকা তুলব কিভাবে? ইউটিউব থেকে টাকা তোলার উপায়ঃ

সাধারণত ইউটিউবে যখন আপনার ইনকাম ১০ ডলার পূর্ণ হবে তখন গুগল এ্যাডসেন্স টিম আপনার ঠিকানা, ব্যাংক একাউন্ট ও গুগল এ্যাডসেন্স একাউন্ট ভেরিফিকেশন করে নেওয়ার জন্য বলবে। আপনি যখন এ্যাডসেন্স এর সেটিংস অপশন হতে আপনার ঠিকানা, ব্যাংক একাউন্ট ও এ্যাডসেন্স একাউন্ট ভেরিফিকেশন করার জন্য আবেদন করবেন তখন গুগল আপনার স্থানীয় ঠিকানার পোস্ট অফিসে একটি চিঠি পাঠাবে। সেই চিঠিতে গুগল এ্যাডসেন্স এর অফিসিয়াল সীলমোহর করা থাকবে। এ্যাডসেন্স এর চিঠি খোলার পর আপনি একটি পিন নম্বর দেখতে পাবেন। উক্ত পিন নম্বরটি ব্যবহার করে আপনার ঠিকানা, ব্যাংক একাউন্ট ও এ্যাডসেন্স একাউন্ট ভেরিফিকেশন করে নিতে পারবেন। তখন থেকে আপনার এ্যাডসেন্স একাউন্টটি ভেরিফাইড শো করবে এবং ভেরিফাইড এ্যাডসেন্স একাউন্টকে গুগল অনেক গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

তারপর ইউটিউবে যখন আপনার ইনকাম ১০০ ডলার পূর্ণ হবে তখন আপনি সেই টাকা উত্তোলন করার অপশন পাবেন। গুগল এ্যাডসেন্স একাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলনের আবেদন করার পর গুগল আপনার টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠিয়ে দেবে। বাংলাদেশ ব্যাংক সেই টাকা আপনার কাঙ্খিত ব্যাংক একাউন্টে পাঠাবে। ভারতের ক্ষেত্রে সম্ভবত সেই রুপি RBI এর মাধ্যমে কাঙ্খিত ব্যাংকে পৌছে দেয়। মূলত এইভাবে ইউটিউব আপনার উপার্জিত টাকা হাতে পৌছে দিয়ে থাকে।

অনেকে মনেকরে ভিডিও আপলোড করে ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করার বিষয় একটি হাস্যকর ও নিছক গল্প ছাড়া আর কিছুই না। কিন্তু এটা চরম সত্য যে, আপনি ঘরে বসে ইউটিউবে কাজ করে গুগল এর কাছ থেকে ফরেন রেমিটেন্স নিয়ে আসতে পারবেন। আমার চেনা কয়েকজন বাংলাদেশী ও কলকাতার ইউটিউবার রয়েছে যারা শুধুমাত্র ইউটিউবে টাকা ইনকাম করে তাদের পুরো পরিবারের সাংসারিক খরছ বহন করে যাচ্ছে। সেই সাথে টাকা ইনকাম করার পাশাপাশি নিজের পড়লেখা বা পেশাগত কাজও চালিয়ে যাচ্ছে।

ইউটিউব কত ভিউ এ কত টাকা দেয়?

ইউটিউব কত ভিউ এ কত টাকা দেয় সেটি বুঝতে আপনাকে বিস্তারিত একটি পোস্ট পড়তে হবে। কারণ ইউটিউব কত ভিউ এ কত টাকা দেয় সেটার অনেক হিসাব নিকাশ আছে। সেই জন্য আমি আপনাদের বিষয়টি এখানে সংক্ষেপে বুঝাতে পারব না। আমাদের ব্লগে এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত পোস্ট রয়েছে। ইউটিউব কত ভিউ এ কত টাকা দেয় বা প্রতি ১০০০ ভিউতে ইউটিউব কত টাকা দেয় সেটি জানার জন্য আমাদের ব্লগের পোস্টটি পড়ে নিবেন। তাহলে ইউটিউব কত ভিউ সমান কত টাকা সেটি পরিষ্কারভাবে জানতে পারবেন।

ইউটিউব থেকে কত টাকা আয় করা যায়?

সাধারণত ইউটিউব গুগল এডসেন্স এর CPC, CTR ও RPM হিসেব করে টাকা দিয়ে থাকে। ইউটিউব থেকে কত টাকা আয় করা যায় সেটা জানার জন্য এডসেন্স এর কালকুলেশনটি বুঝতে হবে। কারণ গুগল এডসেন্স তাদের বিজ্ঞাপনের অনেক বিষয় হিসাব ও বিবেচনা করার পর টাকা পরিশোদ করে। এ বিষয়টি জানার জন্যও আপনাকে আমাদের ব্লগের আরেকটি পোস্ট পড়তে হবে। আমরা সেই পোস্টে এডসেন্স এর সকল গানিতিক ক্যালকুলেশন বিস্তারিত আকারে শেয়ার করেছি। আমরা পোস্টটি এখানে শেয়ার করে দেব। আপনি সেই পোস্ট পড়লে নিজেই বুঝতে পারবেন আপনি ইউটিউব থেকে প্রতি মাসে কত টাকা আয় করতে পারবেন?

কিভাবে ইউটিউব চ্যানেলের আয় বাড়াবেন?

আপনার ইউটিউব চ্যানেলের আয় বাড়ানোর জন্য প্রথমত আপনাকে প্রতিনিয়ত ভালোমানের ভিডিও তৈরি করে ইউটিউবে আপলোড করতে হবে। সেই সাথে ইউটিউব সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন সহ ভিডিও অপটিমাইজেশন করতে হবে। এ দুটি কাজ যখন একসাথে করবেন তখন আপনার ইউটিউব চ্যানেল হতে আয়ের পরিমান দিন দিন বাড়তে থাকবে।

০১। ভিডিওতে বর্ণনা দেয়াঃ

নতুন ভিডিও আপলোড করার সাথে সাথে ভিডিওটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে ভিডিও এর নিচে ৮/১০ লাইনের একটি বর্ণনা লিখে দেবেন। তাহলে YouTube সহজে আপনার ভিডিওটি সম্পর্কে ধারনা পেয়ে যাবে। এতেকরে YouTube নির্ধারিত টপিক অনুযায়ী ভিজিটদের কাছে ভিডিওটি পৌছে দেবে।

০২। ভিডিওতে আকর্ষণীয় Thumbnail দেওয়াঃ

ইউটিউবে ভিডিও দেখার বিষয়টি নিয়ে রিসার্চ করলে দেখা যায় প্রায় ৮০% এর বেশি লোক ইউটিউব ভিডিও এর Thumbnail দেখে ভিডিও দেখা শুরু করে। অনেক ইউটিউবার এটা বলে থাকেন যে, যে যত বেশি আকর্ষণীয় Thumbnail ভিডিওতে ব্যবহার করে তার ভিডিও তত বেশি জনপ্রিয় হয়। আপনি একটি ভিডিও তৈরির জন্য ৩ ঘন্ট খরছ করলে Thumbnail তৈরি করার জন্য মিনিমাম ১ ঘন্টা ব্যয় করবেন। কারণ একটি ভিডিও এর Thumbnail ভিডিওটি কেমন হবে সেটি সংক্ষেপে বর্ণনা করে। কাজেই Thumbnail অবশ্যই ভিডিও এর বিষয়ের সাথে মিল রেখে আকষর্ণীয় করে তৈরি করবেন।

০৩। ভিডিও এর ট্যাগ দেওয়াঃ

ভিডিও আপলোড করার পর Descriptions এর ঠিক নিচের দিকে Tags দেওয়ার জন্য একটি খালি ঘর দেখতে পাবেন। এখানে ছোট ছোট ট্যাগ লিখে দেওয়ার অপশন থাকে। আপনি শুধুমাত্র আপনার ভিডিওটি কোন ক্যাটাগরির সেটা সিলেক্ট করে দেবেন, অর্থাৎ আপনার ভিডিওটি যে টাইপের ঠিক সে ধরনের বা কাছাকাছি ধরনের ১০-১২ টি Tags সিলেক্ট করে দেবেন। এতেকরে সার্চ ইঞ্জিন আপনার ভিডিও এর ধরণ সহজে বুঝে নিতে সক্ষম হবে।

০৪। নিয়মিত ভিডিও তৈরীঃ

নিয়মিত নিত্য নতুন ভালমানের ভিডিও আপলোড করার চেষ্টা করবেন। তাহলে আপনার Channel টির Viewer বাড়তে থাকবে। আর Viewer বাড়া মানেই হচ্ছে আপনার আয় বেড়ে যাওয়া।

০৫। ভিডিও শেয়ার করাঃ

ভিডিও পাবলিশ করার পর বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম, যেমন-ফেইসবুক, টুইটার, গুগল প্লাস ইত্যাদি সাইটগুলিতে আপনার ভিডিও শেয়ার করতে পারেন। এতেকরে লোকজন আপনার ভিডিও সম্পকে সহজে জানতে পারবে।

০৬। ব্যাকলিংক তৈরীঃ

আপনি যে বিষয় নিয়ে ভিডিও টিউটোরিয়াল বা ভিডিও তৈরী করছেন এরকম অন্য জনপ্রিয় ব্লগে আপনার ভিডিওটির লিংক দিয়ে দিতে পারেন। এতে করে সেখান থেকেও আপনার সাইটে প্রচুর ভিজিটর পেয়ে যাবেন।

ইউটিউব থেকে আয় কি হালাল?

ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করার প্রশ্ন আসলে অধিকাংশ লোকের মনে একটা প্রশ্ন জাগে যে, আসলে ইউটিউব থেকে আয় কি হালাল, নাকি হারাম? এই প্রশ্নের জবাবে আমি সংক্ষেপে বলব, হালাল কনটেন্ট এর মাধ্যমে ভিডিও তৈরি করে ইউটিউব থেকে আয় করলে আপনার টাকা অবশ্যই হালাল হবে। আর যদি শরীয়ত পরিপন্থি গান-বাজনা ও না-যায়েজ কোন ভিডিও তৈরি করে ইউটিউব থেকে আয় করেন, তাহলে আপনার আয় হারাম। সুতরাং ইউটিউব থেকে কি ধরনের ভিডিও তৈরি করে আয় আপনি করছেন সেটার উপর নির্ভর করবে ইউটিউবের আয় হালাল নাকি হারাম।

শেষ কথাঃ

যেহেতু YouTube হচ্ছে Google কোম্পানির একটি অংশ, সুতরাং আপনি চাইলে এখান থেকে আপনার পরিশ্রম কাজে লাগিয়ে বিশ্বস্ততার সাথে ইউটিউব থেকে টাকা আয় করতে পারেন। এর সব চাইতে বড় সুবিধা হচ্ছে আপনাকে কোন প্রকার Domain ও Hosting কোনটাই কিনতে হচ্ছে না। তাছাড়া YouTube এর মাধ্যমে খুব সহজেই Google AdSense অনুমোদন পাওয়া যায়। কাজেই আমার মনেহয় এটিই হচ্ছে অনলাইন থেকে টাকা আয় করার সবচেয়ে সহজ, ফ্রি এবং বিশ্বস্ত একটি উপায়।





POST VIEWSl

website counter








Next Post Prev Post

Facebook

Get the latest article updates from this site via email for free!